প্রকাশিত: Sun, Jun 11, 2023 11:53 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 3:21 AM

আইএমএফ চাপ দেয়নি: পরিকল্পনামন্ত্রী

মনজুর এ আজিজ : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সরকার কিছু কিছু রিফর্মে হাত দিয়েছে এবং বাজেটে সেটার প্রতিফলন আছে। তবে সেটি আইএমএফের অনুরোধে, চাপে নয়। আইএমএফ চাপ দেয়নি, তাদের দায়িত্ব মাঝে-মাঝে আমাদের কনসালটেশন করা। উপদেশ বলুন বা শলাপরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের একটা ভূমিকা আছে, ম্যান্ডেট আছে। যেহেতু আমরা তার সদস্য। রোববার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪: ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কর সংগ্রহ করে কমিশন রাখবে, আবার দেবে। কয়েকটা এজেন্ট থাকবে তারা আবার সাব এজেন্ট দেবে। ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম যেমন আগে ছিল, কালেক্টররা নিতো, অনেকটা তেমনই। কিন্তু এটা আরও অ্যাডভান্স হবে। করলে পাবে, না করলে পাবে না। যদিও কেউ-কেউ বলেছেন, ভয়-ভীতি সৃষ্টি হবে। আমার মনে হয় না। তিনি বলেন, কর্পোরেট কর বাড়ানো হয়নি, এটাও বাজেটের একটা ভালো দিক। যদিও আমি মনে করি, এটা আরেকটু বাড়ানো যেত। আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতি। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিজেরও একটা কমিটমেন্ট আছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আছে। দারিদ্রের মূল জায়গা এখনো গ্রাম, যদিও শহরে দারিদ্র বেড়েছে ইদানীং, আবার কমছেও।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাজেট যখন হয় তখন এনবিআরের সঙ্গে মোটামুটি মার্চ থেকে আলোচনা শুরু হয়। আজকে যে বাজেট, যে রাজস্ব হার বা অন্যান্য ফিগার, আমি মনে করি বাংলাদেশের যে অবস্থা, এগুলো আমাদের টার্গেটের সঙ্গে সমন্বয় করেই রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি মোটাদাগে কিছু জিনিস ঠিক করা দরকার। যে আইটেমগুলো আমাদের রেগুলার দরকার, এগুলো নিয়ে যদি আমরা কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারি তাহলে কিন্তু সমস্যা হয় না। মাইক্রোম্যানেজমেন্ট আমার কাছে মনে হচ্ছে ঠিক হয়নি। শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটা আইন করে, কিন্তু এনবিআরের কাছে গেলে সেটি নিহত হয়। সব কিছুর দায়িত্ব এনবিআরকে দিতে হবে কেন? এবার ৫ লাখ কোটি টাকা কর ধরা হয়েছে, আমরা সেটার বিপক্ষে না, কিন্তু আমাদের ওপর যদি চাপিয়ে দেয়া হয়, সে ভয় আমাদের।

জসিম উদ্দিন বলেন, কর আদায়ে আমরা ১৭টি স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে মিটিং করেছি যাতে আইনটা যুগোপযোগী হয়। কিন্তু এই আইন ইতোমধ্যেই সংসদে চলে গেছে। যেখানে এনবিআরকে ঘরের দরজা ভাঙার, জানালা ভাঙার অনুমতি দিয়েছে। সর্বোপরি আমি মনে করি আমাদের এবারের বাজেটে বরাদ্দ পুনর্বিবেচনা করা উচিত। আমাদের মূল্যস্ফীতি এবং জ্বালানির ওপর বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে, এখানে যদি আমরা নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি দিতে পারি, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।

ডি-৮ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বাংলাদেশ মৌলিকভাবেই আমদানি নির্ভর দেশ। জন্মের পর যে টিকা দিতে হয়, কৃষিতে বীজ, সার আমদানি করতে হয়। এ কারণে দেশে টাকার ডি-ভ্যালুয়েশন হচ্ছে। বাজেটটা সামাজিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ফোকাস করে দেওয়া হয়েছে ১১ শতাংশ প্রায়। যে মেগা প্রকল্পগুলো আছে- কক্সবাজার বন্দর, পদ্মা সেতু, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল আসছে, সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে হয়তো প্রাইভেট সেক্টরে ২৭ শতাংশ বিনিয়োগ প্রত্যাশা করা হয়েছে। ওমান এবং কাতারের ক্ষেত্রে জ্বালানি ও খাদ্য খাতে আরও বেশি কাজ করতে হবে। এছাড়া আমি অনুরোধ করব মন্ত্রী মহোদয় যেন খাদ্য ও জ্বালানি খাত ব্যবসায়ীদের বিবেকের কাছে ছেড়ে না দিয়ে রেগুলেশন করেন। 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন, অর্থনীতিবিদ প্রফেসর এম এ রাজ্জাক, বাংলাদেশ প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ, বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বেসিসের সাবেক সভাপতি আলমাস কবির, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ইমেরিটাস এডিটর নাঈমুল ইসলাম খান, একাত্তর টিভির সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না